প্রকৃতির দোহাই
মৃত্যুর অধিকার
আপনি কোনটি
আবু আল আ'লা আল মা'রি
 জীবন অপ্রয়োজনীয়
ধার্মিক
 স্বর্গ এবং সুখের অস্তিত্ব নেই।
আপনি কি সুপারিশ করবেন ?
কেন দীপ জ্বালিয়ে চলে যাচ্ছ?

সাধারণত জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর

আমরা ভালোবাসি বলেই জন্মদানের বিরোধী আমরা। একজন শিশু জন্ম নিলো মানেই পুঁজিবাদী সমাজের দাস হয়ে গেলো। প্রতিনিয়ত নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই, চাপিয়ে দেয়া দায়িত্বের বৃত্তে বন্দী হয়ে গেলো। এই বৃত্ত থেকে মুক্তির একমাত্র পথ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্য। বেশিরভাগ মানুষই শিশুদের হয়ত ভালোবাসে অথচ যারা ভালোবাসে বলেন তারাই শিশুদেরকে নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য, নিজের একাকীত্ব দূর করার জন্য, দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে, বৃদ্ধ বয়সে পিতামাতার নাতিনাতনির মুখ দেখার শখ পূরণ করতে ব্যবহার করেন। তাহলে শিশুদের কে ভালোবাসেন? জন্মদানবিরোধীরা নাকি যারা জন্ম দেয় তারা?

কেউ আমাকে জন্ম দিয়েছে বলে আমারও কাউকে জন্ম দিতে হবে এমন নৈতিক বাধ্যবাধকতা নেই। জন্ম দেওয়া যদি ভালো কিছু হতোও এজন্য তো সম্মান, কৃতজ্ঞতা এবং সেবা মাতা-পিতার পাওয়ার কথা। নতুন করে সন্তান জন্ম দিলেই কি মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হয়?

যদি আপনি মনে করেন সন্তান জন্ম না দেওয়া ঈশ্বরের বিরোধীতা করা তাহলে কেনো আপনি যখন সন্তান চান না তখন জন্মনিরোধক (পিল, কনডম, সিমেন বাইরে ফেলা ইত্যাদি) ব্যবস্থা গ্রহণ করেন?
ধর্মবিশ্বাসটাও আপনাকে জন্মদানবিরোধী করতে পারে। অধিকাংশ প্রধান ধর্মেই স্বর্গ/নরকের কথা উল্লেখ আছে৷ আপনি যদি বিশ্বাস করেন, পরকালে পাপ-পূণ্য হিসেব করে স্বর্গ/নরকে পাঠানো হয় তাহলে নিশ্চয় চাইবেন না আপনার সন্তান নরকে যাক৷
আপনি তখন নরক থেকে বাঁচাতে জোর করে এটা করতে দিবেন না, ওটা করতে বাধ্য করবেন।
যা সন্তানের উপর রীতিমতো অত্যাচার৷ অপরদিকে তাকে তার মতো ছেড়ে দিলেও হয়ত আপনার ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী এমন কিছু করবে যা তাকে নরকবাসী করবে।
সন্তানকে কতদিন আগলে রাখতে পারবেন? মৃত্যুর পরেও?
(ইসলাম ধর্মমতে, সন্তান যদি পাপ করে তবে তার শাস্তি আপনিও পাবেন। এ ভয়ে আপনি নিজেকে এবং সন্তানকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে নানা কঠোর কষ্টদায়ক বিধিনিষেধ সন্তানের উপর চাপিয়ে দেন।
তবুও সন্তান ধর্মীয় দৃষ্টিতে বিপথে যেতে পারে। যার দায় স্রষ্টার কাছে আপনি এড়াতে পারবেন না৷)

আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে সুখী মানুষের কথা কল্পনা করুন।
তিনি কি
*জীবনে কখনো প্রিয়জন হারাননি?
*কখনোই রোগে ভোগেননি?
*চেয়ে না পাওয়ার যন্ত্রণা পাননি?
*সমাজ, পরিবার, দায়িত্বের বৃত্তে কখনো বন্দী অনুভব করেননি?
*কখনোই জীবনের বেড়াজাল থেকে পালাতে চাননি? জীবনে কখনোই হতাশাগ্রস্ত হননি?
*মৃত্যুভয়ে কখনোই উৎকন্ঠিত হননি?
*প্রিয়জনদের থেকে কখনোই কষ্ট পাননি?
*কখনো সবার মাঝে থেকেও একা অনুভব করার যন্ত্রণায় ভোগেননি?
যদি এসবের মধ্য দিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত যেতে হয় তবে কি আপনি তাকে সুখী মানুষ বলবেন?

ধরুন, জন্ম নেওয়ার আগে অনুমতি নেওয়ার অপশন থাকতো আর তাকে (আপনার দৃষ্টিতে সুখী মানুষকে) বলা হতো জন্ম নিলে জীবদ্দশায় এসবের সম্মুখীন হতে হবে এবং জন্ম না নিলে এসবের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না তখন সে কোন অপশন বেছে নিতো বলে আপনি মনে করেন?

মানুষ কি পৃথিবী সৃষ্টির আগে থেকেই ছিলো?
এককোটি বছর আগে তো মানুষ ছিলো না তখন কি পৃথিবী টেকে নি?
টিকে থাকা বলতে যদি পৃথিবীর পরিবেশ ভালো থাকা বোঝেন তাহলে তো মানুষই উল্টো পৃথিবীর পরিবেশ দূষিত করছে।
আপনার মতে, মানুষ তাহলে কিভাবে পৃথিবী টিকিয়ে রাখছে?!

আমাদের পিতামাতা আমাদের জন্ম দিয়ে এই পৃথিবীতে এনে অন্যায় করেছেন কেননা আমরা তো নিজেদের ইচ্ছেয় এই পৃথিবীতে আসেনি, আর আমাদের পিতামাতা আমাদের যখন যন্ত্রণাময় এই জগতে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন, তখন তাঁরা আমাদের কথা মুহূর্তের জন্যেও চিন্তা করেন নি, তাঁরা কেবল তাঁদের সুখ বা ক্ষণিকের আনন্দের দিকটা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন, তাঁরা কি জানতেন না যে এই পৃথিবী ঠিক কতটা যন্ত্রণাময়, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপেই প্রকৃত মৃত্যুর আগেই প্রত্যেককে প্রতিনিয়ত সহ্য করে যেতে হয় শত শত জরা ব্যাধি ও মৃত্যুর যন্ত্রণার মত ঘটনা ?
এই পৃথিবীতে সন্তান জন্ম দেওয়া একেবারেই অনৈতিক, এবং ঘোর অন্যায়, এবং এই দোষে প্রত্যেক পিতামাতাই দুষ্ট|
আমি আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি যে একজন মানুষ যতদিন এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকে তাকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করেই বেঁচে থাকতে হয়, সুতরাং, এই অর্থহীন ও ইঁদুরদৌড়ের যুদ্ধের মধ্যে মহত্ব কোথায়?
এই পৃথিবী কোনভাবেই কোনো সুস্থ মানুষের বেঁচে থাকার উপযুক্ত বাসস্থান হতে পারে না, যখন কোনো মানুষ তার সন্তানকে এই বিভৎস পৃথিবীতে শান্তিতে থাকার গ্যারান্টি দিতে পারে না তখন কোনো মানুষেরই সন্তান জন্ম দেবার অধিকারও থাকতে পারে না ।

লোকেরা প্রায়ই তাদের সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গত করতে খুশি হয়ে বলে যে, তাদের সন্তানরা একদিন বিশ্বকে আরও মানবিক স্থান করে তুলবে।
যাইহোক, যেসকল মা-বাবা এই ধরণের কথা বলেন তাদের (অসুস্থ পৃথিবীতে নতুন শিশু জন্ম দেবার আগে) নিজেকে প্রশ্ন করা উচিৎ, তারা নিজেরাই এবং তাদের পূর্বপুরুষেরা কেনো বিশ্বকে বসবাস উপযোগী করতে পারেনি?

চয়েজ বটে তবে কাউকে খুন করা বা না করার মতোই চয়েজ! নৈতিকতা বিচার করলে কাউকে জন্ম দেয়া কোনো চয়েজ হতে পারে না।
একটি নিকৃষ্ট উদাহরণ দিই, ধরুন, একজন কোমায় থাকা রোগীর সাথে আপনি সেক্স (যদিও একপক্ষীয় এমন আচরণকে সেক্স বলা যায় কিনা প্রশ্নসাপেক্ষ) করলেন,
যেহেতু ঐ রোগীর মতামত দেয়ার সুযোগ নেই তাই আপনি নিজের ইচ্ছাকেই গুরুত্ব দিলেন, রোগী আপনাকে বাধা দেয়নি বা আপনাকে জোরজবরদস্তি করতে হয়নি বলে এক্ষেত্রে কি বলা যায় কোমায় থাকা রোগীর সাথে সেক্স করা না করা আপনার একটা চয়েজ হিসেবেই বিবেচিত হওয়া উচিত?

ধরুন, আপনার সন্তানের
এখনো পোলিও হয়নি,
আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন তাকে পোলিও থেকে রক্ষা করতে আগেই টিকা দিয়ে রাখবেন।
এখন কেউ যদি বলে,
সন্তানকে পোলিও টিকা দিয়ে আপনি আপনার সন্তানের পোলিও হওয়ার পর তাকে সেবা করে তার প্রতি ভালোবাসা দেখানোর
সুযোগই রাখলেন না সেটা হাস্যকর হয়ে যায় , তাই না ?
আপনি যদি চিন্তায় সৎ ও বোধসম্পন্ন হয়ে থাকেন ,তাহলে, হয়তো মানবেন যে,
দঃখু এড়াতেই পৃথিবীর মানষেুর সব আয়োজন, 'সুখ' এর বিভ্রমে ডুবে থাকার চেষ্টা।

এই বইটি জীবন সম্পর্কে আপনার সমস্ত বিভ্রম ভেঙে দেবে। 



বিনামূল্যে এই বইটি পড়তে 





Read more »

List Grid

#buttons=( ঠিক আছে ) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটটি / মোবাইল অ্যাপ 18 বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের জন্য নয়
Accept !
To Top