আমি ছুটছি,প্রতিনিয়ত গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছি,চুড়ান্ত গন্তব্যের।
এই যে জীবনকে ঝাকঝমক করার এত এত সব আয়োজন! সবই তো পরিশেষে গন্তব্যেই মিশে যাবে।
আজকাল দেখছি আমার কলমেরাও বড্ড জেদি হয়ে গেছে।তারাও কিছুতেই ছুটতে চায় না।কিন্তু আমাকে ছুটতে হয়।এই যে আমি ছুটছি,অবিরত ছুটে চলেছি,আমাকে ছুটতে হয়।এভাবে আমাকে জীবন রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে আমার সৃষ্টিকারীরা।
আমি প্রতি মূহুর্তে আমার গন্তব্যকে অনুভব করি।খালি মনে হয়,এই বুঝি স্টেশনে চলে এলাম!
এই বুঝি আমার যাত্রাপথ ফুরালো বলে!
খানিকবাদেই দেখি,এটি ছিলো আমার কাল্পনিক স্টেশন।
এই যাত্রাপথকে বিনোদিত করতে মাঝে মধ্যে এই অনাড়ম্বর জীবনকে আড়ম্বর করার খুবই অপচেষ্টা চলে।কিন্তু ভেতর বলে,সবশেষে তুই তো যাবি মিশে এই মহাবিশ্বের কোষে কোষে।তবে এত আড়ম্বরতা কিসে!তখন ভেতরকে বলি,তুই থাম।জীবনতো একটাই।এই জীবনকে স্বার্থক করে যাবো আড়ম্বরতায় মিশে।
তখন ভেতর অট্টহাসি হেসে বলে,মূর্খ তুই।
আড়ম্বরতা তো একটি বাহ্যিক অভিনয় মাত্র।এই নাট্যমঞ্চে এত নকল চেহারার ভিড়ে,এত কৃত্তিমতার ভিড়ে,এত অশ্লিলতার ভিড়ে নতুন আরেকটি নিষ্কলুষ প্রানকে জন্ম দিস না।তবেই তুই স্বার্থক।
আমি তখন বোধের যন্ত্রণায় নিঃশব্দ চিৎকারে বলে উঠি, হে পৃথিবীর জন্মদানকারীরা!তোমরা এত ন্যায়ের কথা বলো,যখন একটি নির্দোষ, নিষ্কলুষ প্রানকে বিনা অপরাধে এই পৃথিবী নামক নরকে আনো তখন কোথায় থাকে তোমাদের এই ন্যায়ের বুলি?
যে অনস্তিত্বের মাঝে চরম শান্তিতে ছিলো তাকে নিজেদের দল ভারি করতে,তোমাদের মতোই মিথ্যা ন্যায়ের বুলি আওড়াতে আনা তোমরা,
তোমাদের মুখে ন্যায় শব্দটি বড্ড বেশি বেমানান।
তোমরা এটা কেনো ভাবো না!
এই জগত,সংসার যা কিছু, সবই তোমার মস্তিষ্কের সমান।তুমি নেই তো কিছুই নেই।
এই যে তুমি,আমি,আমরা জীবন নামক যাত্রায় প্রতিনিয়ত জ্বলছি,পুড়ছি,ধুকছি।এসবের ইতি আমাদের নিজেদের দ্বারাই হোক না!
আমরা সবাই তো গন্তব্যের দিকেই ছুটে চলেছি।তবে কেনো এই চুড়ান্ত গন্তব্যের যাত্রায় আরো সদস্য যুক্ত করছি?
আমরা কি পেরেছি আমাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে?নিজে যদি না পারি তবে কেনো আরেকটি প্রানকে এই অনিশ্চয়তায় টানছি!
আমাদের দ্বারাই হোক না শেষ, গন্তব্যের।
চুড়ান্ত গন্তব্যের।