আমি তো ছিলাম চিরশান্তির অনস্তিত্বে যেখানে না প্রেম ছিল,না বিষাদ,
না জান্নাত ছিল,না জাহান্নাম,
না ধনী ছিল,না গরিব,
না বিশৃঙ্খলা ছিল,না বৈষম্য,
না ছিল এমন বিষাদগ্রস্থ বিপর্যস্ত কোন পৃথিবী!
তোমরাই সেখান থেকে এই চিরস্থায়ী বেদনার অথৈ পাথারে আমাকে জন্ম দিলে অবসাদ হতে পালানো প্রতিযোগীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে,
যেমনটা তোমরা পালিয়ে বাঁচতে চাইছো মৃত্যুর অপেক্ষায়।
আশ্চর্য এটাই তোমাদের এই অন্যায় এবং অনৈতিক নির্বোধ কাজকে তোমরা মহিমান্বিত করে চলেছো যেভাবে সৃষ্টির নিখুততার প্রশ্নে সকলে নিজ স্থানে সুন্দর লোকদেখানো এই স্বীকারে সন্তুষ্টতা দেখায় কোন গোঁড়া বিশ্বাসী,
কিন্তু তোমরা সবাই সত্যটা জেনেও ভান করে থাক অথবা সত্যের ভয়ংকর তীব্রতায় নিজেকে পোড়াতে ভয় পাও এবং লুকিয়ে রাখ সত্যকে নানা ভ্রমের মায়াজালে,
তাই আজও সেই নয়'শ খ্রিস্টাব্দের ইতিহাস সমাধির পৃষ্ঠস্থ থেকে অদৃষ্টিগোচরে থাকা আবুল আ'আলা মা'আরি সাক্ষ্য দিচ্ছি তোমরা অপরাধী এবং পাপী,
যে অপরাধ তোমাদের পিতামাতা তোমাদের প্রতি করেছিল সে অপরাধ তোমরা তোমাদের সন্তানদের প্রতি করতেছো।
আরেকটি কৌতুকময়ী বিষয় হল তোমাদের এই অপরাধের জন্য বিজ্ঞান দায়ী করে তোমাদের স্বার্থবাদী জিনকে,
অপরদিকে ধর্ম দায়ী করে তোমাদের আদি পিতা-মাতার নির্বুদ্ধিতাকে।
বলো কিভাবে তোমাদের হোমো-স্যাপিয়েন্স বা বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে মেনে নিই,
যেখানে তোমরা তোমাদের স্বার্থবাদী জিনের কথা আবিষ্কার করার পরেও দীর্ঘায়িত করে চলছো তোমাদের বৈষম্য-বিশৃঙ্খলিত অন্তহীন দুঃখের এই জীবনকে?
বলো কিভাবে তোমাদের আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মেনে নিই,
যেখানে তোমাদের আদি পিতা-মাতা চাইলেই নিজেদের মাঝে শেষ করতে পারতেন মানব ইতিহাস অথবা অসূচিত রাখতে পারতেন পৃথিবী নামক বেদনার গ্রহ ও পুনরুজ্জীবনের জাহান্নামকে,আর তোমরা তো তাদেরই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাহান্নামকে পরিপূর্ণতা দিয়ে চলছো,
তোমরা যদি জন্ম না দিতে বলো কে জাহান্নামে যেত?
বলো এরপরেও কি করে তোমাদের বুদ্ধিমান বা সৃষ্টির সেরা হিসেবে মেনে নিই?
হ্যাঁ,তোমরা নির্বোধ,
তোমরা এতটাই নির্বোধ যে তোমাদের জম্মই যে সকল সমস্যা-বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী সেটা তোমাদের চোখে ঝাপসাই রয়ে যাচ্ছে তোমাদের শৃঙ্খলিত এবং উদ্ভাবিত পৈশাচিক সুখের কুয়াশার ঘনে,
বলো তোমরা জন্ম না দিলে-
কে ধর্ষক হতো,কে-ই বা ধর্ষিত হতো?
কে খুন হতো,কে-ই বা খুনী হতো?
কে জুলুম করত,কে-ই ব নিপীড়িত হত?
কে শোষক হতো,কে-ই বা শোষিত হতো?
তোমরা হলে অবিচারক-বিবেকহীন এক স্বার্থবাদী কীট,
যে কিনা শুধু নিজের কথা ভেবে,নিজের বেদনাকে ঘুচাতে,নিরর্থক নিষ্ঠুর পরম্পরা বজায়ে অনুমতি ব্যতীত চিরস্থায়ী বেদনার অস্তিত্বে স্বর্গের লোকেদের জন্ম দেয়।
যেখানে মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত সবাইকে শুধু ভালো থাকার সংগ্রাম করে যেতে হয় নিজেরেই রক্তের বিরুদ্ধে,
পরাজিত করতে হয় মেধায় নতুবা বন্দুকের নলে।
বলো এরপরেও কি করে তোমরা শ্রদ্ধা,ভালবাসা প্রত্যাশা কর?
তোমরা নিজেদের যৌন এবং জিনের টিকে থাকার স্বার্থান্বেষী তাড়নায় এতটাই অন্ধ হয়ে পড় যে,
অনস্তিত্বের স্বর্গে বিদ্যমানকে তোমরা নিয়ে আসো নির্বাসিত এক বিপর্যস্ত পরীক্ষালয়ে!
তোমাদের এহেন অন্ধত্বে সেই পৌরাণিক ঈশ্বরও এখন সন্দিহান গন্ধমের কার্যকারিতার প্রশ্নে,
তোমরা যদি জন্ম না দিতে তবে কার বিচার করতেন ঈশ্বর?
বলো এরপরেও কি করে তোমাদের বিবেকবান-নৈতিক বলি?
তোমরা এতটাই মগজহীন বিপ্লবী যে সমস্যার মূল উৎপাটন না করে দেয়ালে পিঠ ঠেকানো কে প্রতিহত করে ক্ষান্ত গেছো বারংবার,
বলো তোমাদের বিপ্লবীরা যাওয়ার পরেও কি উক্ত সমস্যা আধুনিক রূপে তোমদের দেয়ালে পিষছে না?
তোমাদের মূর্খতায় গন্ধম গাছও লজ্জায় শুকিয়ে মারা গেছে,আর শয়তানের নিকট পরাজিত হয়েছে ঈশ্বর বহুকাল,
যতকাল তোমরা শয়তানি পুঁজিপতিদের ফাঁদে পড়ে জন্ম দিয়েছো প্রজা চিরকাল।
তোমাদের সভ্যতা,শিক্ষা,আধুনিকতার পরদে পরদে রয়েছে কেবলই হত্যা,ঠকানো আর দমনের দানবীয় নিষ্ঠুর বাস্তবতা,
তোমরা কেবলই নিজেদের সন্তুষ্টির জন্য এসকল মায়াজাল তৈরি করেছো মাত্র আদতে এসব শুধুই তোমাদের নির্বোধ অহংকার মাত্র!
তোমাদের আকাঙ্ক্ষা যেখানে কেবলই অন্যের দুরাবস্থা- অন্যের রক্ত,
এবং যা তোমাদের এক পৈশাচিক বিজয় উন্মাদনার অনুরণন দিয়ে যায় অথবা দেয় সন্তুষ্টি ভালো থাকার।
বলো এরপরেও কি করে তোমাদের সভ্যতা,শিক্ষা-আধুনিকতা সত্য হয়?
তোমাদের অব্যাহত নির্বোধ জন্মদানে সিসিফাসও তোমাদের জীবনের নিরর্থকতা বোঝানো থেকে সরে ক্ষোভে পাথরকে চূড়ো থেকে নিজের মাথার উপর ছেড়ে দিয়ে আত্মহত্যা করে নেয়।