পশুর গনহত্যা প্রসঙ্গে কিছু কথা

এক জন্মদানবিরোধী
0




 রোম সম্রাট নিরো'কে নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। তিনি তার পার্টিতে মানুষ পুড়িয়ে আলোর ব্যবস্থা করেছিলেন। আর অতিথিরা সেটা উপভোগ করেছিলো অথবা নীরব ছিলো।

এখানে নিরো যেমন দোষী তেমনি এই ঘটনায় যারা চুপ ছিলো এবং উপভোগ করেছিলো তারাও দোষী।


নিরিহ পশুদের গনহত্যার উৎসবে যারা চুপ থাকে তারাও নিরো'র অতিথিদের মতোই। 

"

যদি এমন হয়,

মানুষের চেয়ে শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান প্রাণী পৃথিবীতে আসে এবং তারা আমাদের  গোয়ালঘরে রাখে, সহজভাবে বলতে গেলে গৃহপালিত করে রাখে।

(যেমনিভাবে আমরাও করেছি মুরগী,  ছাগল, ভেড়াদের।) 

এমনকি নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য যদি আমাদেরকে চিড়িয়াখানাতে প্রদর্শনী করা হয়!

(যেমনিভাবে আমরাও করে চলেছি বানর, হরিণদের।)

আমাদের থেকে তারা দুধ সংগ্রহ করলো, মাংস পেলো এবং চামড়া দিয়ে ব্যাগ,  জুতা বানালো। 

নারীদের থেকে দুধ যেহেতু এমনি এমনি আসেনা তাই তারা নারীদের গর্ভবতী করলো নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী।  বাচ্চা জন্মের পর পরই বাচ্চাদের মেরে ফেললো এবং যতটুক সম্ভব দুধ দুইয়ে নিলো।  এরপর কয়েকমাসের মধ্যেই আবার গর্ভবতী করালো।  এভাবে নারীদের জীবদ্দশায় প্রায় পুরোটা সময় গেলো গর্ভবতী অবস্থায়! 

শুধুমাত্র তাদের দুধের সাপ্লাই দিতে।


 গ্রামাঞ্চলে আমরা যেমন দেখি,

 বাছুর দুধে মুখ দেবার খানিকবাদেই টেনেটুনে সন্তান এবং মাকে আলাদা করা হয়! সেরকমটা আমাদের সাথেও যদি করা হয়!

অথবা  সাহারা মরুভূমির লোকরা যেভাবে পশুর বাচ্চার নাক এবং উপরের ঠোঁট কেটে ফেলে যেনো বাচ্চারা অল্পতেই  হাঁপিয়ে ওঠে এবং কম দুধ খেতে পারে যেন বাকি দুধ দিয়ে বলবানরা উদর ভরতে পারে!

এমনটা যদি মানুষদের সাথে কেউ করতো!

ভাবতে পারেন কতটা নিষ্ঠুরতা? 


তখন সেই বলবান প্রাণীরা ভুলে যাবে মানুষেরাও একদিন সামাজিক প্রাণী ছিলো।

মানুষেরাও একদিন নিজেরাই সঙ্গী বেছে নিয়ে মিলিত হতো।

যেমনিভাবে আমরা ভুলে গেছি,

 এই গৃহবন্দী প্রাণীরাও আগে সামাজিক ছিলো। 

 তারাও নিজেরাই পছন্দ করে সঙ্গী নির্বাচন করতো।

এবং তখন মানুষের চেয়ে বলবান, বুদ্ধিমান প্রাণীরাও অনুভব করবে না, 

সন্তানের মুখ থেকে দুধ কেড়ে নেওয়া কতটা নিষ্ঠুরতা এবং এটা কতটা কষ্টের সন্তান এবং একজন মায়ের জন্য! 

যেমনিভাবে অনুভব করছি না আমরাও!


( মূলভাব নিয়েছি স্যাপিয়েন্স বইয়ের পৃঃ ৬৬-৭০ থেকে)


যদি ধরে নেই, এই মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছেন। মানুষ যে স্রষ্টার সৃষ্টি গরু, ছাগলও সেই স্রষ্টারই সৃষ্টি।

তার মানে তো মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী তার দৃষ্টিতে সমান হওয়ার কথা!


আপনার এক সন্তান প্রতিবন্ধী এবং আরেক সন্তান সুস্থ হলে কি দুজন আপনার চোখে দু'রকম হতো?


অথচ ঈশ্বর তারই এক সৃষ্টিকে বললেন, আরেক সৃষ্টিকে হত্যা করে তাকে সন্তুষ্ট  করতে!


*এমনিতেও তো রেস্টুরেন্টে যেয়ে চিকেন ফ্রাই খান!

*- আপাতত আমি নিরামিষভোজী।

*কেনো যারা পশুদের গনহত্যার বিপক্ষে অথচ আমিষভোজী তাদের নিয়ে কিছু বলছেন না?

*-বলছি না কারণ তারা আপনাদের থেকে ভণ্ডামি কম করে। গোশত খাওয়ার জন্য কল্পিত ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করে না!

ঈশ্বর থাকলে সে তার অবলা সৃষ্টিদের হত্যা করতে বলতো না। 

*দিনে কম বেশি তো মুরগী, গরু, মাছ মানুষ খাচ্ছেই। এ ব্যাপারে কী বলবেন?

*- আমি/ আমরা জানি প্রতিদিন কমবেশি মানুষ হত্যা করা হয় তবে আমাদের তেমন টনক নড়ে না কিন্তু যদি গনহত্যা হয় তাহলেও কি আমরা চুপ থাকি?






লিখেছেন : মোহনা সেতু



🌺জন্মদানবিরোধী🌺 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=( ঠিক আছে ) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটটি / মোবাইল অ্যাপ 18 বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের জন্য নয়
Accept !
To Top